ঝগড়া দিয়ে শুরু কিন্তু ভালোবাসায় শেষ <3

খুনসুটি ঝগড়া, আর আমার ভালবাসা

এইত সেদিন তার সাথে পরিচয়।ফেসবুকে।এরপর ধীরে ধীরে ভালোলাগা,ভালোবাসা।

চেপে রেখেছিলাম মনের কথাগুলো।একদিন সাহস করে বলেই ফেললাম ।ও প্রথমে রাজি হয় নি। কিছুদিন পর ও আমার ভালোবাসার কাছে হার মানলো ।মেনে নিলো আমাকে ।

ঝগড়া দিয়ে শুরু হয়েছিলো আমাদের,(প্রথম পরিচয়েই ঝগড়া) ভালোবাসায় শেষ হলো।:D

 

চলছিলো দিন এভাবেই ।হাসিখুশি খুনসুটিতে ।আমি একটু আধটু কবিতা লিখতে পারতাম ।মজার বিষয় হলো ইরিন ও কবিতা লিখতে পারতো ।আমি ওকে কবিতা লিখে মেসেজ করতাম আর ও আমার কবিতার প্রশংসা করতো ।ইরিন ও আমাকে কবিতা লিখে দিতো । কিন্তু ওর কবিতা খুব বেশি সুন্দর হতো ।ওর ভালোবাসার ছোঁয়া পেতাম ওর কবিতায় ।কেউ আমাকে এতটা ভালোবাসে এটা ভেবেই যেন শিহরিত হতাম ।মেয়েটা আমার কত খেয়াল রাখে ! প্রতিদিন আমার খাওয়া দাওয়া,ওষুধের খবর নিতো ।আমি সবে এস এস সি পাস করেছি ।খুব বড় হইনি ।বয়সটাও কম ।খুব ভালো লাগতো ওর কথাগুলো।

 

ও আমাকে “বাবু” বলে ডাকতো ।ও বলতো আমার সবকিছুই নাকি ছোটবাবুদের মতো, আমি নাকি ছোটবাবুদের মতো নিষ্পাপ তাই ও আমাকে এত ভালোবাসে।

আমার থেকে এক বছয়ের ছোট হলেও ইরিনকে দেখতে একবারে বাচ্চাদের মতো লাগতো।যেন ক্লাশ টু থ্রিতে পড়া এক চঞ্চল বাচ্চা মেয়ে।যার চঞ্চলতায় পাগল হয়ে থাকতাম আমি সবসময় ।তাই আমিও ওর একটা নাম ঠিক করলাম “পিচ্চি”

 

চলছিলো বাবু আর পিচ্চির ভালোবাসা ।যদিও আমরা একে অপরের কাছ থেকে অনেক দূরে থাকতাম। তবুও যেন একজন আরেকজনের সাথে থাকতাম। আমি কখন কি করছি না করছি সব ও চোখ বুঝেই বলে দিতো। আমি অবাক হয়ে থাকতাম। কোন কিছুই লুকোতে পারতাম না আমার পিচ্চির কাছে। ঠিকই ধরে ফেলতো। খুব বকা খেতাম। বকা দেয়ার সময় পিচ্চি আমাকে তুমি থেকে তুই ডাকা শুরু করতো। আমি হাসতাম,যেন আমার কোন গুরুজন আমাকে শাসন করছে। ভালোই লাগতো ওর শাসন।

 

দেখতে দেখতে চলে এলো রোজা। প্রথমবার প্রিয়জনের সাথে রোজার মাস পালন করলাম। আমার পিচ্চিটা খুব ভালো। ও সবসময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো। শুধু রোজার মাসে যে পড়ত এমন না। আমিও চেষ্টা করতাম পড়তে। কিন্তু ছুটে যেত নামাজ মাঝে মাঝে। পিচ্চির সে কি রাগ! বকা দিতো ঘূনিঝড়ের মতো।

 

সেহরী খেয়ে আড্ডা দিতাম আমরা। মাঝে আড্ডা দিতে দিতে ঘুমিয়ে পড়তাম আমি। ও রাগ করত। ঘুম থেকে উঠেই শুরু হয়ে যেত পিচ্চির রাগ ভাঙানো। ও আমার ওপর রাগ করে থাকতে পারত না। তাই ওর রাগ ভাঙানোটা খুব সোজা ছিলো।

 

ঈদ এসে গেল। ঈদের আগের দিন ওকে জিজ্ঞেস করলাম, প্ল্যান কি? তোমার আমার প্রথম ঈদ।

ও আমাকে বললো,”তুমি আমাকে কখনো ফোনে আই লাভ ইউ বল নি, এবার বলবা। আমি আমার বাবুটার মুখে শুনতে চাই। আমিও বলব”

 

আমি তো পড়ে গেলাম মহা বিপত্তিতে।ফোনে আমি তো মেয়েদের সাথে কথা ও বলতে পারি না।(ওর সাথেও ফোনে খুব কম কথা হতো কারন আমি কথা বলতে গেলেই ঘামতে শুরু করতাম) আর আমি কি না বলব আই লাভ ইউ!

 

যাই হোক, ঈদের দিন দুপুরে ফোন দিলাম পিচ্চিকে। কতক্ষন কথা বললাম। এর পর ও আমাকে আগের কথা স্মরন করিয়ে দিলো।

ও আমাকে অনেক সুন্দর করে “আই লাভ ইউ” বললো। আমি তো লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। আমি বললাম বললাম যে আমি পারব না। ও একটু মন খারাপ করলো।

কোন উপায় না দেখে আমি বললাম আচ্ছা ঠিকাছে, “রেডি, ওয়ান, টু , থ্রি , আই লাভ ইইইউ! ”

বলেই ফোন কেটে দিলাম।

 

পিচ্চি আমাকে মেসেজ দিয়ে বললো, “ঐ হাবলা আমি রাগ করেছি।তুমি সুন্দর করে বলতে পারো নি। তোমার কথায় মনে হয়েছে যেন মাষ্টাররে কাছে পড়া দিচ্ছ।“

আমি ওকে বললাম যে, আবার বলতে চেষ্টা করব । সুন্দর করে বলতে।

 

রাতে বাসা থেকে বের হয়ে গলির মাথায় গিয়ে ওকে ফোন দিলাম।ও বললো, হ্যা বলো ।সুন্দর করে বলতে হবে কিন্তু।

আমি বললাম,আচ্ছা ট্রাই করছি।

“জান,আমি তোমাকে অনেএএএক ভালোবাসি।will u marry me?”

ও একটা মিষ্টি হাসি দিলো।যেন এক অপ্সরীর হাসি।আমি ফোনটা কেটে দিলাম।

 

ফোনটা কেটে দিয়েই দেখি আমার পাশে একটা লোক!

আমি তো লজ্জায় শেষ! কিছু না বুঝেই গুলির বেগে দৌড়ে গেলাম বাসায়।

খুব লজ্জা পেয়েছিলাম সেদিন।লজ্জায় দুদিন বাসা থেকে বের ই হই নি।

 

এখন প্রতিদিনই অন্তত ১০,১৫ বার পিচ্চিকে আই লাভ ইউ বলি। কিন্তু আগের মতো এত লজ্জা লাগে না।

ও শুধু হাসে। ওর মিষ্টি হাসিটা খুব বেশি ভালো লাগে।

 

আবার চলে এসেছে আরেকটা ঈদ।এবার জানি কি হয়। অপেক্ষায় আছি।

 

গল্পটা পিচ্চির অনুমতি না নিয়েই দিয়ে দিলাম। ও বোধহয় এতক্ষনে গাল ফুলিয়েছে।যাই ওর রাগ ভাঙাই। “I LOVE U PICCI”

 

Related posts

Leave a Comment